1. sufalcse55@gmail.com : Sufal Kumar : Sufal Kumar
  2. admin@worldvoice24.com : World Voice24 : World Voice24
শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন
Sat, 12 October 2024, 02:55 PM

সেনাবাহিনীর হাতের ছোঁয়ায় বদলে গেছে সাজেক

আবু বকর ছিদ্দিক
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২০
  • ৫২৮ বার পড়া হয়েছে
বাঘাইছড়ি উপজেলায় সাজেকের অবস্থান হলেও এর যোগাযোগ ব্যবস্থা খাগড়াছড়ি দিয়ে। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৬৯ কিলোমিটার। পথিমধ্যে নজরে আসবে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ী নদী কাচালং-মাচালং ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার দৃশ্য।
সাজেকের সুউচ্চ পাহাড়ে দাঁড়ালে যে কেউ চলে যাবেন আকাশের কাছাকাছি। কল্পনাবিলাসী মনের অজান্তে হাত চলে যেতে পারে আকাশ ধরতে। আর নিচের দিকে তাকালে ভাবনা আসতেই পারে কিভাবে উঠলেন এতো উপরে!
সাজেকের কোথাও নীল আকাশ আবার কোথাও কালো মেঘের ভেলা, কোথাও ঝুম বৃষ্টি আবার কোথাও প্রখর রোদ। সাজেকের সবশেষ সীমানা কংলাক। কংলাক রুইলুই থেকে আরও দেড়ঘন্টার পায়ে হাঁটার পথ। কংলাকের পরেই ভারতের মিজোরাম।
বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ থেকে শুরু করে অনেক মন্ত্রী এমপি ও দেশের অনেক শীর্ষ রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট নাগরিকরা ছুটে এসেছেন বাংলার দার্জিলিং খ্যাত এই সাজেকে।
বর্তমান সময়ের আকর্ষনিয় পর্যটনকেন্দ্র সাজেকের পরিচিতি ছিলো দূর্গম জনপদ হিসেবে। সে সময়ে সাজেকের কাছাকাছি থাকা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির মানুষের কাছে দূর্গম সাজেকে যাওয়া ছিলো স্বপ্নপূরীর মতো।
সৃষ্টিকর্তার নিপূণ সৃষ্টি আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতের ছোয়ায় সাজেক এখন বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে রুপান্তরিত হয়েছে। এই এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সেনাবাহিনীর অবদান ভুলার মতো নয়।
২০১৪ সালের প্রথম সপ্তাহে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের আওতাধীন দুর্গম সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পাড়ায় শুরু হয়েছে রুইলুই জুনিয়র হাই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৩ বছর পর একটি জুনিয়র স্কুল পেয়ে ২০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার এলাকাবাসী যেনো হাতে পেয়েছে সোনার হরিণ।
এর আগে নানা প্রতিকুলতা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নির্মাণ করেন ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ খাগড়াছড়ি-দিঘীনালা-সাজেক সড়ক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তৈরি সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ও যাতায়াত সড়ক স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান পাল্টে দিয়েছে।
তাছাড়া সাজেকে রাস্তার দু’পাশে নির্মাণ করা হয়েছে ফুটপাত। লাগানো হয়েছে সোলার স্ট্রীট লাইট। সাঁঝ ঘনিয়ে আসলেই জ্বলে উঠে সোলার স্ট্রীট লাইটগুলো। রাস্তার দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় অর্ধ-শতাধিক ছোট ছোট ঘর যাতে পূনর্বাসিত করা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অর্ধ-শতাধিক পরিবারকে। পানি সরবরাহের জন্য পোর্টেবল ওয়াটার সাপ্লাইয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সাজেকের লোকজনকে এখন আর বিশুদ্ধ পানির ভোগান্তিতে কষ্ট করতে হয়না। এছাড়া সরকারিভাবে করে দেওয়া হয়েছে ক্লাব হাউজ, গীর্জা, মন্দিরসহ আরো অনেক প্রকল্প।
খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে বাস্তবায়িত হওয়া এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন চট্রগ্রাম অঞ্চলের তৎকালিন জিওসি মেজর জেনারেল সাব্বিরুল ইসলাম। তাই সাজেকবাসীর কৃতজ্ঞতা সেনাবাহিনীর কাছে।
সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় পর্যটকদের জন্য বেশকিছু বিনোদনের মাধ্যমও রাখা হয়েছে সাজেকে। সাজেকে সেনাবাহিনী পরিচালিত দু’টি রিসোর্ট রয়েছে। একটি সাজেক রিসোর্ট, অন্যটি রুন্ময় রিসোর্ট। বেসামরিক রিসোর্টের মধ্যে হ্যারিজন গার্ডেন, ছায়াবীথি, রংধনু ব্রীজ, পাথরের বাগান উল্লেখযোগ্য। পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য একাধিক বিশ্রামাঘার ও ক্লাবঘরও রয়েছে রুইলুই পাড়ায়।
সাজেকের পর্যটন খাতে ৩শতাধিক লোক সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর রুইলুই প্রজেক্টে ২৪ জন কর্মরত। এসকল লোক আগে বেকার ছিলো বা জুম চাষের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতো। এ ছাড়াও পরোক্ষভাবে সাজেকের পর্যটন খাতে শতাধিক লোক জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
সাজেককে জনসাধারণের সুবিধার্থে আরও বেশী দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি উন্নত জীবনযাত্রার সাথে সংযুক্ত হচ্ছে সেখানে বসবাসরত পাংখোয়া, লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষেরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট নানা কর্মসংস্থান ও আর্থিক কর্মে জড়িত থেকে তাদের জীবনমানের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। এক কথায় সেনাবাহিনীর হাতের ছোয়ায় ধিরে ধিরে সাজেক দেশের অন্যতম আকর্ষনিয় পর্যটনকেন্দ্রের তালিকায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© সর্বসত্ব সংরক্ষিত 2023 WorldVoice24 || All Rights Reserved.