বিবেক।। অদৃশ্য মহামারী করোনার থাবায় এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি যশোর জেলার একমাত্র ক্রিকেট ব্যাট তৈরির গ্রাম খ্যাত নরেন্দ্রপুর গ্রামের ব্যাট পল্লীতে।
যশোর সদরের নরেন্দ্রপুর গ্রামের মহাজের ও মিস্ত্রীপাড়ার প্রায় শতাধিক ছোটবড় ব্যাট তৈরির কারখানা গুলোতে এখন কোনো কর্মব্যস্ততাই নেই। অদৃশ্য মহামারী করোনার আগ্রসনে অন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের মত জনপ্রিয় এখাতেও ভাটাপড়ে গেছে। সমগ্র যশোর জেলার মধ্যে ব্যাটের গ্রাম হিসাবে সুখ্যাতি অর্জনকারী এগ্রামজুড়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রিকেট খেলার সরঞ্জামাদী সাথে যুক্ত ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের পদারচোনায় মূখরিত থাকলেও
দেশের এই ক্রান্তিকালীন সময়ে দেখা দেওয়া উল্টো চিত্রের মধ্যে দিনাতিপাত করছে এশিল্পের সাথে যুক্ত ৫০-৬০ টি পরিবার। জানাগেছে দেশের মধ্যে পুরো ক্রিকেট ব্যাটের অন্যতম যোগানদাতা যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুরের এই ব্যাটপল্লী। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে এতোই বেশি ক্রিকেট ব্যাট তৈরি ও বিপণন হয়েছে যে সবায় এখন নরেন্দ্রপুর গ্রামকে চেনেন ‘ব্যাটের গ্রাম’ নামে।
এই এলাকার অনেকেই ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করে নিজেদের ভাগ্য ফিরিয়েছে। সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মিস্ত্রিপাড়াটি মূলত ‘ব্যাটের গ্রাম’ হিসেবে সুখ্যাতী লাভ করেছে। এই গ্রামের কাঠমিস্ত্রি সঞ্জিত মজুমদারের হাত ধরেই এ রূপকথার যাত্রা। সে ১৯৮৪ সালের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দিদি বাড়ি বেড়াতে যেয়ে কাঠের তৈরি নানা শিল্পকর্ম দেখে ভিন্ন কিছু করার কথা ভাবেন। এরপর দেশে ফিরে তার ভাইপো উত্তম মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করেন জনপ্রিয় ক্রিকেট খেলা সরঞ্জামাদি তৈরির কাজ। সে থেকে এই। বর্তমানে এই গ্রামের মিস্ত্রি ও মহাজের পাড়া মিলিয়ে ছোটবড় ৬০-৬৫ টি ব্যাট তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। এ কারখানা থেকে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজারের মত ক্রিকেট ব্যাট প্রস্তুত ও বিপনন হচ্ছিলো। কিন্তু অদৃশ্য এই মহামারী করোনার কারনে দেশের অন্যন্য সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় এই শিল্পেও ভাটা পড়ে।
ব্যাট তৈরির কারিগর সুশান্ত কুমার জানান,‘তাদের তৈরি ক্রিকেট ব্যাট যশোরের বাজার ছাড়াও বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অর্ডার করে নিয়ে যেতেন। করোনার কারনে সবকিছু বন্ধ থাকায় ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। দেশের সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার সাথে-সাথে এব্যবসায় আবারও প্রাণ ফিরে আসবে। তবে লোকশান কাটিয়ে উঠতে সরকারী ভাবে সহজ শর্তে কুটির শিল্পের আওত্বায় এনে লোনের ব্যবস্থা করার দাবী এই পেশাজীবীদের।