মাগুরা: শরতের স্নিগ্ধ সকাল। শিউলি, বকুল, গোপাল, জবার সৌন্দর্য প্রকৃতিকে করেছে অপরূপ। এছাড়াও রয়েছে মরিচ, বেগুন, কলমি শাক, লাউসহ, লাল শাক রয়েছে শখের ছাদ বাগানে।
মাগুরার নতুন বাজারের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় ডেকোরেটর ব্যবসায়ী তরুণ ভৌমিকের প্রায় ১০ শতক জমির ওপর দুইতলা বাড়ির ছাদে শখ করে গড়ে তুলেছেন ‘শখের ছাদ বাগান’। সকাল অথবা বিকেলে অবসর সময়ে প্রিয় ছাদ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন এই ব্যবসায়ী।
মাগুরায় নগরায়নের ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে জমির পরিমাণ। জমি বলতে থাকছে এক টুকরো ছাদ। করোনা মহামারিতে বাসা বাড়িতে অবসর সময়ে বসে না থেকে অনেকেই শুরু করেছেন ছাদ বাগান।
মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তুর্য্য জানায়, করোনা ও লকডাউনের মধ্যে বাড়ির বাইরে যেতে পারিনি। তখন বাবার সঙ্গে ছাদ বাগানে কাজ করেছি। বাবা আমাকে গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। গাছের বিষয়ে অনেক কিছু শিখেছি বাবার কাছ থেকে।
ডেকোরেটর ব্যবসায়ী তরুণ ভৌমিক বলেন, নগরায়নের যুগে আমরা ভূমি হারিয়ে ফেলছি। ভূমি বলতে থাকছে আমাদের একখণ্ড ছাদ। ছাদ বাগান করতে খরচ হলেও শাক, ফুল, ফল, নিত্যদিনের পূজার ফুলের চাহিদা মেটানো যায়। আমার ছাদ বাগানে প্রায় ১২ রকমের জবা ফুল রয়েছে। ফলের মধ্যে রয়েছে থাই পেয়ারা, সফেদা, জামরুল, আনার, চায়না কমলা, পিচফল, ড্রাগন ফল।
তিনি আরো বলেন, কারিগরি জ্ঞান না থাকার কারণে অনেক সময় সঠিক পরিচর্যার অভাবে গাছ মারা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যদি প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের ব্যবস্থা করতেন অনেকেই ছাদ কৃষির ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতেন।
মাগুরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আবু তালহা বাংলানিউজকে বলেন, শহর ছাড়াও গ্রাম অঞ্চলে অনেকের দালান বাড়ি হচ্ছে। ছাদের উপরে চাষ করা সবজি একটি পরিবারের প্রতিদিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা যেকোন ধরনের কারিগরি জ্ঞান যদি প্রয়োজন হয় সেটা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। বিশেষ করে কোন মৌসুমে কোন গাছ রোপন করতে হবে, কোন টবে কোন গাছ রোপন করতে হবে সেই বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিয়ে আসছি। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের সরকারি অফিসের ছাদেও ছাদ বাগান তৈরি করা হচ্ছে। এতে যেমন পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে তেমনি বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাওয়া যাবে।