ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, গণতন্ত্রের মানে হচ্ছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। আপনি যখন কোনো সাংবাদিককে ধরে নিচ্ছেন, গ্রেপ্তার করছেন, তার মানেই হচ্ছে আপনি গণতন্ত্র চান না। আপনি অত্যাচার, অনাচার করতে চান। এটা দেশের জন্য কখনো শুভ নয়।
আজ বুধবার ডিইউজে আয়োজিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী, ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, ডিইউজের সাবেক সহসভাপতি খুরশিদ আলম ও সৈয়দ আলী আসফার, আহমেদ মতিউর রহমান, আবু ইউসুফ, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী, সাদ বিন রাবি, খন্দকার আলমগীর হোসাইন, আমিরুল ইসলাম অমর, আব্দুস সেলিম, জাকির হোসেন, জেসমিন জুঁই, আবু হানিফ, আসাদুজ্জামান আসাদসহ অন্য সাংবাদিক নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমরা সবাই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। এ দেশের মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বারবার নেমেছে এবং জিতেছে। তাই আমি অনুরোধ করব, আপনারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তবে সাংবাদিকদের নির্যাতন ও গ্রেপ্তার বন্ধ করুন এবং রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দেন।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রোকন বলেন, ‘আমরা রুহুল আমিন গাজী-আবুল আসাদসহ সব সাংবাদিকের মুক্তি দাবি করছি। বাংলাদেশে যে জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম চলছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, সেই জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে আমাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নির্ভয়ে সাংবাদিকতা করার গ্যারান্টি ফিরিয়ে আনতে হবে।’
বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে কণ্ঠরুদ্ধ করা হচ্ছে এবং আওয়ামী লীগ সরকার ভিন্নমতের প্রকাশকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। সে জন্যই এই সরকার আতঙ্কিত।‘ তিনি বলেন, যারা দিনের ভোট আগের রাতে ব্যালট বাক্সে পুরে ক্ষমতা দখল করেছে, তারাই রাষ্ট্রদ্রোহী। রুহুল আমিন গাজী দেশ স্বাধীন করেছেন। জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, কথায় কথায় বিরুদ্ধ মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে সরকার দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করতে একটি ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকরা চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। কথায় কথায় সাংবাদিক নির্যাতন, সংবাদমাধ্যম বন্ধ এমনকি সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যার কোনো বিচার হচ্ছে না। সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত রিপোর্ট ৭৫ বার পেছানো হয়েছে। এতে এটিই প্রমাণিত হয়, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রভাবশালী কেউ জড়িত।
ডিইউজের একাংশের এই সভাপতি বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে রাষ্ট্রদ্রোহের বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সরকারের সমালোচক, প্রতিবাদী কলামিস্ট, বিবেকবান লেখক-বুদ্ধিজীবীদের বর্তমান ফ্যাসিষ্ট সরকার এক অশুভ বার্তা জানান দিল। তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দেওয়া না হলে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ঘেরাও করবেন।