বঙ্গবন্ধু সরকারের অধীনে তৎকালীন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান চারশ’ টাকা বেতনে চাকরি করেছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ। বিএনপি দাবি করে জিয়ার কথায় নাকি দেশ স্বাধীন হয়েছে। চারশ’ টাকার চাকরিজীবীর কথায় কীভাবে দেশ স্বাধীন হয়?
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মৎস্যজীবী লীগের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. গোলাপ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে জায়গা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সরকারের অধীনে চারশ’ টাকার বেতনে চাকরি করেছিলেন জিয়া। বিএনপি দাবি করে জিয়ার কথায় নাকি দেশ স্বাধীন হয়েছে। চারশ’ টাকার চাকরিজীবীর কথায় কীভাবে দেশ স্বাধীন হয়?
দুই সেনাশাসক জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নাম যারা মুছে ফেলার চেষ্টা করছে, তারাই মূল ষড়যন্ত্রকারী। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যায় না। আজ ঘরে ঘরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে বঙ্গবন্ধু কর্মী গড়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধুর যে নীতি ছিল, সেই নীতিতে সমুদ্র জয় করেছে বাংলাদেশ।
পেছনের রাস্তা দিয়ে ক্ষমতার আসার দরজা বন্ধ হয়ে গেছে উল্লেখ করে ড. গোলাপ নেতাকর্মীদের প্রতি বলেন, কোনো অপশক্তি যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে।
সুযোগসন্ধানীদের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ড. গোলাপ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের লাখ কর্মী ছিল। তারা এখন কোথায়? দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার (মুক্তির) জন্য একটি আন্দোলন করতে পারেনি বিএনপি। আসলে যে দল ক্ষমতায় থাকে, কিছু লোক সেই দলে যোগ দেয়, এদের থেকে সাবধান। ত্যাগীরা কখনো সুবিধা নেয়ার জন্য সংগঠন করে না। তারা সবসময় ত্যাগ স্বীকার করে দলের জন্য কাজ করে। আর সুবিধাবাদীরা ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেয় সুবিধা নেয়ার জন্য।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নেতাকর্মীরা বাসায় ঘুমাতে পারেনি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই এখন নেতাকর্মীরা বাসায় ঠিক মতো ঘুমাতে পারে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সরকারি চাকরি দিয়েছে বিএনপি। যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।
জনসাধারণের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, নেতাকর্মীদের সহনশীল ব্যবহার করতে হবে। কেউ যেন মনে কষ্ট না পায়। যেন আগামী দিনে শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসতে পারেন। নিজেদের মধ্যে কোনো বিভেদ-বিতর্ক সৃষ্টি করা যাবে না, এজন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
মৎস্যজীবী লীগ প্রসঙ্গে ড. গোলাপ বলেন, শেখ হাসিনা নিজে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ গঠন করেছেন। এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত। শেখ হাসিনার শুভ নজরে আছে বলেই এই সংগঠনের নতুন কমিটি করা হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া কাউকে বাহবা দেয়ার দরকার নেই।
আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মো.সায়ীদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নস্করের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক, সহ-সভাপতি আবুল বাশার, আব্দুল গফুর, মুহাম্মদ আলম, গিয়াস খান, মোহাম্মদ ইউনুস, মো. নাছির উদ্দিন মানিক, মঞ্জুর কাদের মোহান, মমতাজ খানম, নাসরিন আক্তার, সাজ্জাদুল হক লিকু সিকদার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম, রফিকুল ইসলাম খান, ফিরোজ আহম্মেদ তালুকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় সহযোগিতা করেন সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. শফিউল আলম শফিক ও দফতর সম্পাদক এম.এইচ এনামুল হক রাজু।