সংকটের মধ্যে ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। ফলে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনায় ডলারের দাম পড়বে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা আর আমদানিতে পড়বে ১১০ টাকা। তবে নির্ধারিত দামে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে কম। আজও ব্যাংকগুলো ১২৩ টাকার বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনেছে।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) আজ বুধবার রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী রোববার থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন দুটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনতে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা; আগে যা ছিল ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম নেওয়া যাবে ১১০ টাকা, আগে যা ছিল ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিতে পারবে। ফলে প্রবাসী আয় পাঠালে ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা পাবেন উপকারভোগীরা।
ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময় সময় বাফেদা ও এবিবি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংক–সংশ্লিষ্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে তারা সময় সময় ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে।
সংগঠন দুটির নির্ধারিত দামে ডলার কেনাবেচা করছে না সব ব্যাংক। এখন যেসব ব্যাংক বেশি দাম দিচ্ছে, তারাই প্রবাসী আয়ের ডলার বেশি কিনতে পারছে। প্রবাসী আয় সংগ্রহে আজও ১২৩ টাকা দাম দিয়েছে রেমিট্যান্স হাউসগুলো। এর চেয়ে বেশি দামে তাদের থেকে প্রবাসী আয় কিনেছে দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে আমদানিকারকদের এর চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।
খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সামনে নির্বাচনের জন্য বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা না করে কৃত্রিমভাবে ডলার–সংকট কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে চলতি মাসে তিন দফায় ১ টাকা দাম কমানো হয়েছে। রিজার্ভ বাড়াতে ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনা হচ্ছে। অথচ ব্যাংকগুলো আমদানি দায় শোধ করতে পারছে না। তাই বিভিন্ন দেশের ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
আজকের সভায় উপস্থিত বাফেদা ও এবিবি নেতারা বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ অনুমোদন হয়েছে। এ ছাড়া এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বাজেট সহায়তার অর্থ আসবে। সব মিলিয়ে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ আসবে চলতি মাসে। ফলে রিজার্ভ বাড়বে। এই যুক্তি তুলে ধরে তাঁরা দাম কমানোর ঘোষণা দেন।